বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য? কিভাবে দূর করবেন। জেনে নিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ

 

বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য? কিভাবে দূর করবেন। জেনে নিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ

বাচ্চার বাথরুম ক্লিয়ার হচ্ছে না। ওয়াশরুমে গেলেই সে কান্নাকাটি করছে কারন তার কষ্ট হচ্ছে। সপ্তাহে ১ বার কিংবা তারও কম সে হাগু করছে এবং এই জন্য পেট ফাঁপা দিয়ে থাকে ফলে বাচ্চা খেতেও চাচ্ছে না। এমন কমপ্লেইন নিয়ে অনেক বাবুদের মায়েরা আমাকে প্রশ্ন করেন। কিভাবে তার বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবে? কি খাওয়াবে?  আজকে বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়, কখন বুঝবেন এটা আসলেই কোষ্ঠকাঠিন্য কিনা এবং সমাধান কি এই নিয়ে কথা বলবো। 

বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয় আসলে? 

১) বাচ্চাদের ইগনোরেন্স। হ্যা ঠিকই ধরেছেন। অনেক সময় বাচ্চারা খেলতে বসলে,  কার্টুন দেখলে, কিংবা অন্য কোন কাজের সময় ডিস্টার্বেন্স এড়াতে তারা তাদের ওয়াশরুমের প্রেসার থাকলেও যেতে চায় না বা এই প্রেসার কে ইগনোর করে। অনেক সময় স্কুলে থাকলে বা আত্মীয়ের বাসায় গেলে ওয়াশরুম পছন্দসই না হলেও বাচ্চারা এই কাজ করে থাকে। এ কারনে বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা অনেক বেশি হয়। 

২) প্রাকৃতিক ভাবেই বাচ্চাদের গাট মুভমেন্ট স্লো। সো হজম হতে একটু বেশি সময় নেয়। যদি আপনার বাচ্চা সপ্তাহে ২ বারের কম বাথরুম করে। সেক্ষেত্রে ধরে নিতে হবে তার কোষ্ঠকাঠিন্য আছে। 

৩) বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হবার আরেকটা মেইন রিজন তাদের ডায়েট। স্বভাবত কারনেই বাচ্চারা শাকসবজি কম খায়। ফাইবার ইনটেক বাচ্চাদের অনেক লো। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা যায়। 

৪) অনেক বাচ্চাদেরই ফর্মুলা মিল্ক দেয়ার প্রবনতা আমাদের দেশে প্রচলিত।  ফর্মুলা মিল্ক বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য তৈরি করে। আবার অনেক সময় গরুর দুধ + দুগ্ধজাত খাবার( চিজ) বাচ্চাদের বাথরুম ক্লিয়ার হতে দেয়না। 

৫) আবার অনেক সময় বাবা কিংবা মায়ের আইবিএস সি সিম্পটমস থাকলে বাচ্চাদের মাঝে ও সেইম সমস্যা দেখা যায়। 

৬) এই যুগের একটা অন্যতম ফ্যাশন বাচ্চাদের স্নাক্স হিসেবে ফাস্টফুড আইটেম, কাপ নুডুলস,  চিপস আইটেম দেয়া৷ এই ফুডস গুলোতে প্রচুর স্যুগার আর সোডিয়াম থাকে। যা বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হবার প্রধান কারন। 

কীভাবে বাচ্চার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করবেন? 

১) বাচ্চাদের হাই ফাইবার যুক্ত ফল এবং সবজি দেয়া৷ প্রতিদিন মিনিমাম ৫০-৬০ গ্রাম সবজি বা ফল দেয়া।  ফলের ক্ষেত্রে আপেল, পেঁপে, নাসপাতি, কমলা বেশ ভালো কাজ করে৷ 

২) বাচ্চাদের পানি খাওয়ার অভ্যাস কম থাকে। সেক্ষেত্রে বাচ্চাকে একটু বেশি পানি খাওয়ানো।। 

৩) ফর্মুলা মিল্ক বা গুড়ো দুধের পরিবর্তে ১৮ মাসের বেশি বয়সের বাচ্চাদের জন্য গরুর দুধ এবং এর কম বয়সী বাচ্চাদের কে ছাগলের দুধ খাওয়ানো। 

৪) বাচ্চা যাতে পটি চেপে না রাখে সেদিকে খেয়াল রাখা।

৫) দিনে অন্তত ১/৪ কাপ টক দই/ বা ঘরে তৈরি মিষ্টি দই খাওয়াতে পারেন। যদি বাচ্চা না খেতে চায় তাহলে লাচ্ছি তৈরি করে দিতে পারেন। 

৬) বাচ্চারা অনেক সময় আস্ত ফল খেতে চায়না এক্ষেত্রে বাসায় বানানো ফলের জুস দিতে পারেন। 

৭) বাচ্চাদের ফাস্টফুড, জাংক ফুড থেকে দূরে রাখা, চিপস কাপ নুডুলস একদমই অফ করে দেয়া। নুডুলস চিপস দিলে হোমমেইড দেয়া। 

মনে রাখবেন আপনার বাচ্চার আজকের ফুড হ্যাবিট তার ফিউচারের পথ সুগম করবে। 

সুমাইয়া শিলা 

চাইল্ড এন্ড রিপ্রোডাক্টিভ নিউট্রিশন কনসালট্যান্ট

বিএস, পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট, 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url