ডিপ্রেশন কি? কেন হয়। মুক্তির উপায় জেনে নিন

ডিপ্রেশন কি? কেন হয়। মুক্তির উপায় জেনে নিন


ডিপ্রেশন কি? কেন হয় 

ডিপ্রেশন ছাড়াই প্রতিটি মানুষই মাঝে মাঝে দুঃখ বা কষ্ট পেতে পারে। এটি আমাদের জীবনে নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। তাহলে ডিপ্রেশন কি? ডিপ্রেশন হলো শূন্যতা, দুঃখ বা আনন্দ অনুভব করতে না পারার একটি দীর্ঘস্থায়ী অনুভূতি যা স্পষ্ট কারণ ছাড়াই ঘটতে পারে। এটি দুঃখ এবং অন্যান্য আবেগ থেকে পৃথক। একজন ব্যক্তি জীবনের কঠিন ঘটনাগুলির জন্য যেকোন সময় ডিপ্রেশন অনুভব করতে পারেন।

ডিপ্রেশন বা অবসাদে কমবেশি ভুগেনি এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। ডিপ্রেশন বা অবসাদ এর বিভিন্ন কারণ আছে, তার মধ্যে স্বাস্থ্যগত কারণ টি প্রধান।

ডিপ্রেশন এবং দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি/অবসাদের একটি খুব সাধারন কারন হচ্ছে আয়রনের অভাব।

আয়রনের ঘাটতি বলতে আমরা যদিও মুলত রক্তশুন্যতাকেই বুঝি কিন্তু রক্তশূন্যতা ছাড়াও আয়রনের ঘাটতি খুবই সাধারন এবং দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি ও বিষন্নতার একটি প্রধান কারন।

বিশ্বব্যাপী ২৫% মানুষের রক্তস্বল্পতা রয়েছে।যাদের মধ্যে ৫০% এরই আয়রন ডেফিসিয়েন্সি এনিমিয়া দেখা যায়।

আমেরিকায় ৫০ বছরের নিচে ১% পুরুষ এবং ১০% মহিলাদের মাঝে এই ধরনের রক্তস্বল্পতা দেখা যায় এবং একে মূলত হিমোগ্লোবিনের অভাব থেকেই আমরা চিনি।

রক্তে হিমেগ্লোবিন কম থাকা আসলে আয়রন ডেফিসিয়েন্সির একটা তীব্র পর্যায়েই ধরা পড়ে কেননা হিমোগ্লোবিন স্বাভাবিক থাকার পরেও অনেকের দেহেই অল্পসংখ্যক আয়রন জমা থাকতে পারে, ট্রান্সফেরিন স্যাচুরেশন কম থাকতে পারে কিন্তু তাদের হিমোগ্লোবিন তখনও দেখা যায় স্বাভাবিকই থাকে।

কোকাকোলা না মোজো—কোনটি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী?

এভাবেই রোগীরা ৩০-৪০ বছর ধরে বাঁচতে পারে, মানুষ মনে করে এই লোক সারাক্ষন এমন মনমরা হয়ে পড়ে থাকে কেন?? আসলে তো সে সেলুলার লেভেলে আয়রন ডেফিসিয়েন্ট।

ক্রনিক লো গ্রেড ইনফ্ল্যামেশানের কারনে অনেকেরই রক্তে আয়রন কম কিন্তু টিস্যুতে উচ্চমাত্রার আয়রন থাকে, এধরনের লোকদের অবস্থা আরও খারাপ হয়।

যেহেতু, হিমোগ্লোবিন আয়রনের একমাত্র বায়োমার্কার না, তাই হিমোগ্লোবিন ঠিক থাকলেই এটা মনে করার কারন নেই যে কারো আয়রন ডেফিসিয়েন্সি নেই। আপনার হিমোগ্লোবিন স্বাভাবিক থাকলেও আয়রনের পরিমান তুলনামূলক কম থাকতে পারে।

এই অবস্থায় আপনি  ডিপ্রেসড থাকতে পারেন, সারাক্ষন শরীর ক্লান্ত লাগতে পারে, ছোটখাট ওয়ার্কআউট এর জন্য কোন শক্তি নেই এমনও লাগতে পারে। 

যদিও আপনি দাঁতে দাঁত পিষে ওয়ার্কআউট/শারীরিক কসরত করেনও, আপনি দিনের পর দিন শরীরে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করবেন। সিঁড়ি বেয়ে উঠার সময় কিংবা ঢালু জায়গায় হাঁটার সময় বিভিন্ন জায়গায় ব্যথা অনুভব করা এর আরেকটি লক্ষণ।

ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির উপায় 

সাধারনত, আয়রন গ্রহন করা কোনো সমস্যা না, খাবারের মাধ্যমে পর্যাপ্ত পরিমান আয়রন পাওয়া যেতে পারে। তাই কেউ যদি খুব কঠোরভাবে নিরামিষভোজী/ভেগান না হয়, তবে খাবার থেকে প্রাপ্ত আয়রনই যথেষ্ট, এই কথা আপনি বই পুস্তকে পাবেন। বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের দেশের মানুষ গরু-খাসীর গোশত বা ছোট মাছ খুবই কম খায় এবং যথেষ্ট শাকসবজিও খায় না। তাই আয়রনের অভাব এখানে খুব স্বাভাবিক ব্যাপার।

ওপরের সমস্যাগুলোতে যারা ভুগছেন, তাদের উচিত আয়রনজাতীয় খাবার-গরু-খাসী-মুরগীর কলিজা, গোশত, ছোট মাছ এবং সবুজ-লাল শাকসবজি যথেষ্ট পরিমানে গ্রহন করা।

অনেকে ড্রাগন ফল-বিটকে আজকাল আয়রন বাড়ানোর জন্য খুব হাইপে নিয়ে আসছেন, কিন্তু আয়রনের সবচে সেরা সোর্স হচ্ছে কলিজা ও ছোট মাছ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url