থাইরয়েড মেডিসিন ব্যবহারের সময় যে ব্যাপারগুলো ভেবে দেখা হয় না।
১)দেহের ভিটামিন-মিনারেলের ঘাটতিগুলো বিবেচনায় না নেওয়া :
হাইপোথাইরোয়ডিজমের কারণে দেহ থেকে ম্যাগনেসিয়াম বের হয়ে যেতে থাকে। আবার, থাইরয়েড মেডিসিন খাওয়া শুরু হওয়ার সাথে সাথে দেহে তীব্রভাবে ম্যাগনেসিয়ামের চাহিদা বাড়তে থাকে। এখন রোগীর দেহে তো পূর্ব থেকেই ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি ছিলো।
ফলস্বরূপ বেড়ে যায় হার্টবিট। দেহের স্ট্রেস রেসপন্স বেড়ে যায় এবং অ্যাংজাইটি ও ইনসমনিয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। ইন্ডেভার জাতীয় ওষুধ হয়ে দাঁড়ায় তখন নিত্যসঙ্গী।
অনেকটা একই রকম (কিন্তু আইডেন্টিক্যাল না) সমস্যা দেখা দেয় ভিটামিন বি, ডি এবং ক্যালসিয়ামের ক্ষেত্রে।
তাই থাইরয়েড মেডিকেশন শুরুর সময় দেহে ভিটামিন-মিনারেলের ঘাটতি পূরণ করার দিকে নজর দেয়া উচিত কারণ থাইরয়েড হরমোন অতি দ্রুত দেহের মেটাবলিজম এবং পুষ্টির চাহিদা বাড়িয়ে দেয়।
২)স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টকে গুরুত্ব না দেয়াঃ
কর্টিসলের পরিমাণ অতিরিক্ত কম বা বেশি হলে T3 কোষে প্রবেশ করতে পারেনা। এটা রক্তে জমা হয়ে "T3 পুলিং" সৃষ্টি করে। যদি হঠাৎ কোনো কারণে কর্টিসল লেভেল স্বাভাবিক হয় (রিল্যাক্স টাইম বা আকস্মিক স্ট্রেস) জমে থাকা T3 গুলো সাথে সাথে কোষে প্রবেশ করে। এটা ক্ষেত্রবিশেষে মারাত্মক সাইড ইফেক্টসের কারন হতে পারে।
পাশাপাশি, অপর্যাপ্ত বা অতিরিক্ত স্ট্রেস হরমোন থাইরয়েড মেডিকেশনের কার্যকারিতা ব্যাপকভাবে হ্রাস করে দিতে সক্ষম।
কিডনি পাথর কত প্রকার? কিডনি পাথর প্রতিরোধের উপায় জেনে নিন
এক্ষেত্রে দেখা যায় ভিটামিন বি-৩, বি-৫ ও ভিটামিন সি প্রায়ই থাইরয়েড রোগীদের জন্য বেশ কার্যকর উপশম নিয়ে আসে।
তাই থাইরয়েড হরমোন নিয়ে কাজ শুরুর আগে স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টে সময় দেয়া জরুরী।
৩)শুধু বিশাল ডোজে T4 দিয়ে ট্রিটমেন্ট শুরু করা :
রোগীদের শুধু বিশাল ডোজে T4 দিয়ে ট্রিটমেন্ট শুরু করার ফলে ওপরের সবকয়টা সমস্যা আরো বাড়তে থাকে এবং অনেক রোগী প্রায়ই এই T4 কে T3 তে কনভার্ট করতে পারেন না।
এই সমস্যার সমাধান কি??
১)গ্লুটেন ও সয় ফ্রি ডায়েটে যাওয়া
২)সীফুড ইনটেইক করা
৩)প্রয়োজনে ডিএইচএ-ইপিএ ও সেলেনিয়াম থেরাপিউটিক ডোজে নেয়া
৪)অত্যন্ত জরুরী হলেও মানুষ প্রায়ই এটা ভুলে যায়ঃ পর্যাপ্ত খাবার না খাওয়া
থাইরয়েড মেডিসিন খুব জলদি মেটাবলিজম বাড়িয়ে দেয় (T3 এটা কয়েক মিনিটে করে ফেলে), তাই ক্যালরি এবং বিশেষ করে কার্বের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। তাই ঘনঘন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার এবং কার্ব গ্রহণ না করলে রোগী দ্রুত ক্ষুধার্ত হয়ে পড়বে এবং এর ফলে দেহের অ্যাড্রেনাল স্ট্রেস রেসপন্স অ্যাক্টিভেট হয়ে যাবে।সেটা আবার থাইরয়েড T3 কে RT3 বা রিভার্স ট্রাই আয়োডো থাইরনিনে পরিনত করে দিতে সক্ষম, বাড়াতে সক্ষম TSH, ফলে আবার কিন্তু রোগী একই বৃত্তে ঘুরপাক খেতে থাকবে।
একারনেই, অত্যন্ত লো ক্যালরি ডায়েটে হাইপোথাইরয়েড রোগীকে রাখা হলে তারা মারাত্মক বিষণ্ণতা, হতাশা, রাগ ও মানসিক ভারসাম্যহীনতায় আক্রান্ত হতে পারেন এবং তাদেরকে দেয়া থাইরয়েড মেডিকেশন কাজ নাও করতে পারে।
আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই ভুলটাই করা হয়। মেটাবলিজম স্লো, সেজন্য একটা মানুষকে যদি আপনি সারাবছর ৬০০-১৪০০ ক্যালরির ডায়েটে রাখেন, ধারাবাহিকভাবে ব্লাড গ্লুকোজ কমে গিয়ে মানুষটার পুরো ফিজিওলজিক্যাল সিস্টেম শাট ডাউনের দিকে আগাবে।