ইনফার্টিলিটির একটা হিডেন প্রিকার্সর হচ্ছে ডোপামিন-সেরোটোনিন ডেফিসিয়েন্সি এবং প্রোল্যাক্টিন ডমিন্যান্স।
নারী এবং পুরুষ উভয়ের দেহেই অতিরিক্ত প্রোল্যাক্টিনের উপস্থিতি তাদের ডিম্বানু ও শুক্রানুর উৎপাদনকে বাধাগ্রস্ত করে।
আবার একই সাথে, ডোপামিন-সেরোটোনিনের অভাবও প্রোল্যাক্টিনের উৎপাদন বাড়িয়ে দিতে সহায়তা করে।
যারা সারাদিন টিকটক-ফেইসবুক-ইন্সটাগ্রামে রিলস দেখে বা ইউটিউবে ঘন্টার পর ঘন্টা ভিডিও দেখে পার করেন, তাদেরকে আগে থেকেই জানিয়ে দেই, আপনাদের এই কার্যক্রম লং রানে আপনাদের ডোপামিন লেভেল কমায় এবং আপনাদেরকে প্রোল্যাক্টিন ডমিন্যান্ট বানায়।
প্রোল্যাক্টিন বাড়লে যে শুক্রানু বা স্পার্ম প্রোডাকশনই শুধু কমে তাই না, বরঞ্চ স্পার্ম কোয়ালিটিও খারাপ হয়ে যায়।
আবার একই সাথে, যেহেতু প্রোল্যাক্টিন আর ডোপামিন পরস্পরবিরোধী, তাই প্রোল্যাক্টিন বাড়ার ফলে ডোপামিন উৎপাদন কমে যায়। এই ডোপামিন কমে গেলে সৃষ্টি হয় নানা রকমের শারীরিক সমস্যা, যেমনঃ
১)কাজে কর্মে অকারন ক্লান্তি ও অনীহা
২)শারীরিক শক্তির অভাব বোধ করা(এমনকি শক্তি থাকলেও)
৩)ইচ্ছাশক্তি ও মনোবলের অভাব
মানব সভ্যতা বিকাশে পরিবারের ভূমিকা
৪)সেক্সের প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়া অথবা সেক্স শুরুর পর খুব দ্রুত আগ্রহ হারিয়ে ফেলা
৫)বীর্যপাতের পর পুনরায় দৃঢ়তা লাভ করতে অনেক বেশি সময়(৩৫ বছরের একজন পুরুষের জন্য ৪-৬ ঘন্টারও বেশি সময়) প্রয়োজন হওয়া
৬)সেক্সের শুরুর দিকে ফোকাস করতে ব্যর্থ হওয়ার ফলে ইরেক্টাইল ডিজফাংশন দেখা দেয়া
৭)শরীরে মাংসপেশী কমে যাওয়া
দুর্ভাগ্যজনকভাবে শুধু ভিডিও নির্ভর সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের ডোপামিন লেভেলের যে ভয়ংকর অবস্থা বিগত দশ বছরে করেছে তা এখন আমাদের পারিবারিক জীবনেও ফেলছে তীব্র প্রভাব।
ডোপামিন ডেফিসিয়েন্সি থেকে মুক্তির উপায় হচ্ছেঃ
১)ভারী ব্যায়াম তথা স্ট্রেন্থ ট্রেইনিং করা
২)১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রার ঠান্ডা পানিতে গোসল করা(সবার জন্য প্রযোজ্য না)
৩)ডিপ ন্যাজাল-ন্যাভাল ব্রিদিং করা
৪)ভিটামিন বি-৬ সমৃদ্ধ খাবার-গরু-মুরগীর গোশত, স্যামন, টুনা, ইলিশ, ডিম, পালংশাক, অন্যান্য সবুজ শাক, কলা, এভোকাডো, মসুর ডাল, বুটের ডাল, মটর শাক এগুলো নিয়মিত খাওয়া
৫)লো ফ্যাট-লো ক্যালরি ডায়েট না করে প্যালিও/মেডিটেরেনিয়ান টাইপ ডায়েট করতে চেষ্টা করা
৬)ফেইসবুক-ইন্সটা ও টিকটকে রিলস একেবারেই না দেখা এবং ভিডিও যত কম সম্ভব দেখা
৭)যারা নিয়মিত পর্নোগ্রাফি দেখেন তাদের উচিত এটা এড়িয়ে চলা
৮)স্ত্রীর সাথে নিয়মিত সেক্সের অভ্যাস করা
সেক্স লাইফ এবং মেটাবলিক হেলথ যত ভাল হবে, স্পার্ম কাউন্টও তত ভাল থাকবে।
ইন্ডিয়া/সিঙ্গাপুর গিয়ে বারবার দৌড়ানোর চেয়ে লাইফস্টাইলে ফোকাস দেয়াটা অনেক সাশ্রয়ী ও টেকসই সমাধান। ঠিকভাবে চেষ্টা করলে ৯০% এরও বেশি ক্ষেত্রে সাফল্য আসবেই ইনশা আল্লাহ।
নিউট্রিশনিস্ট সজল।