ফুলকপি কেন খাবেন?
ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইটোকেমিকেলসহ বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদানে ভরপুর সবজি ফুলকপি। শীতকালীন সবজি ফুলকপি অনেকেই আছে যারা ফুলকপি পছন্দ করেন না। শীতে খাবারের তালিকায় ফুলকপি রাখা অত্যন্ত জরুরি।ক্যান্সার প্রতিরোধক ফুলকপি। ফুলকপির সালফোরাফেন ক্যান্সারের স্টেম সেল ধ্বংস করতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন ধরনের টিউমারের বৃদ্ধি প্রতিহত করে। আর এই সালফোরাফেন উপাদান রক্ত চাপ কমায়। যার ফলে হৃদযন্ত্র ভালো রাখে।
ফুলকপিতে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি। যা ‘অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি নিউট্রিয়েন্টস’, যা শরীরের দহন প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। ভিটামিন এবং মিনারেল রয়েছে ফুলকপিতে। শরীরে কর্মক্ষম বজায় রাখার জন্য সঠিক পরিমাণে পুষ্টি জোগায় ফুলকপি। নিয়মিত ফুলকপি খেলে দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়।
ফুলকপি আপনার মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। ফুলকপিতে আছে ভিটামিন বি যা মস্তিষ্কের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শিশুদের ফুলকপি খাওয়া উচিত। হজমে সহায়ক ফুলকপি। এই সবজি ফাইবার খাবার হজম হতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
শিশুদের শীতকালীন স্কুল টিফিন কেমন হওয়া উচিত
ফুলকপিতে রয়েছে ভিটামিন ‘বি’, ‘সি’, ‘কে’, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও জিংক।একটি মাঝারি আকারের ফুলকপিতে রয়েছে শক্তি-২৫ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট-৪.৯৭ গ্রাম , প্রোটিন-১.৯২ গ্রাম , ফ্যাট-০.২৮ , আঁশ-২ গ্রাম, ফোলেট-০.৫৭ মাইক্রোগ্রাম, নিয়াসিন-০.৫০ মাইক্রোগ্রাম, থায়ামিন-০.০৫ , প্যানথানিক এসিড-০.৬৬৭ মাইকোগ্রাম।ফুলকপি পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজি।এর পাতার উপরিভাগে ক্যানসার নিরোধক উপাদান পেয়েছেন বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। বাল্টিমোর জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের গবেষকরা ফুলকপির পাতায় আইসো থায়োসায়ানেটস নামক রাসায়নিক পদার্থ পেয়েছেন। বিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখেছেন, মলাশয় ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অর্ধেক কমাতে হলে সপ্তাহে প্রায় দুই পাউন্ড ফুলকপি এবং এ জাতীয় শাকসবজি খেতে হবে।
বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন, ফুলকপির কচি পাতা সপ্তাহে এক আউন্সের কিছু বেশি খেলে তার দেহে ক্যানসারের ঝুঁকি অর্ধেক কমতে পারে। আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, ফুলকপির কচি পাতা থেকে সংগৃহীত আইসো থায়োসায়ানেটস নির্যাস প্রয়োগে ওদের বুকের টিউমারের আকার ও সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে, যা ক্যানসারে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ছিল।ফুলকপির পাতায় প্রচুর ভিটামিন ‘এ’ ক্যালসিয়াম, খাদ্যশক্তি ও আয়রন আছে। এতে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কালো কচুশাকের চেয়ে প্রায় দেড়গুণ, সবুজ কচুশাকের চেয়ে প্রায় ৩ গুণ, লালশাকের চেয়ে দ্বিগুণ, কলমিশাকের চেয়ে ৬ গুণ, পুঁই ও পাটশাকের চেয়ে ৭ গুণ, পালং ও ডাঁটা শাকের চেয়ে ৮ গুণ, মুলাশাকের চেয়ে ২৫ গুণ ও গরুর দুধের চেয়ে ৫ গুণ বেশি আছে। ফুলকপির কচি পাতায় প্রায় সব খাদ্যের চেয়ে অনেক বেশি আয়রন আছে। যেমন-সবুজ কচুশাকের চেয়ে ৪ গুণ, ডাঁটা শাকের চেয়ে দেড় গুণ, কলমিশাকের চেয়ে ১০ গুণ, মুলাশাকের চেয়ে ১২ গুণ ও পালংশাকের ৫ গুণ বেশি আয়রন আছে। খাদ্যশক্তিও প্রায় সব শাকসবজির চেয়ে অনেক বেশি আছে। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ আছে। খাদ্যোপযোগী প্রতি ১০০ গ্রাম ফুলকপির পাতায় ক্যালসিয়াম ৬২৬ মিলিগ্রাম ও আয়রন ৪০ মিলিগ্রাম থাকে। ফুলকপিতে আয়রনের পরিমাণ আলু, মুলা, মিষ্টিকুমড়া, বেগুন, টমেটো, চিচিঙ্গা ও ঝিঙ্গার চেয়ে বেশি। তবে এই পুষ্টিমান ফুলকপির জাত ও উৎপাদনের স্থানের ওপর নির্ভরশীল।