টয়লেটে বসে মিনিটের পর মিনিট সময় ও শ্রম ব্যয় করেও যখন পেটের শান্তি মিলে না, তখন এই সমস্যায় ভুক্তভোগী ব্যক্তি বোঝেন ঠিকমতো পায়খানা হওয়া কতটা শান্তির। পায়খানা না হওয়ার এই অবস্থাকেই কোষ্ঠকাঠিন্য বলে। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি মানুষের কাছেই কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ সমস্যা। কিন্তু যখন এই সমস্যাটা আরও বেড়ে যায়, পায়খানা একদম বন্ধ হয়ে যায় তখন অনেকেই ছুটে ওষুধের জন্য। ট্যাবলেট, সিরাপ আকারে বিভিন্ন ওষুধ পাওয়া যায়।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপ সম্পর্কে এই লেখায় বলবো যে সিরাপ গুলো এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিবে দ্রুত সময়ে।
কোষ্ঠকাঠিন্য
পায়খানা বা মল শক্ত হওয়া, পায়ুপথ দিয়ে শক্ত মল আসায় পায়ুপথে ব্যথা, পায়খানা না হওয়া - এই অবস্থাগুলোই কোষ্ঠকাঠিন্যতা। মানুষ নিজেদের করা কিছু ভুল কাজের কারণেই এই সমস্যা ডেকে আনে।
পানি কম পান করা, ভাজাপোড়া বেশি খাওয়া, শাকসবজি না খাওয়া, অ্যালকোহল গ্রহণ, শারীরিক পরিশ্রম না করা, হতাশা ও দুশ্চিন্তায় বেশিরভাগ সময় কাটানো, পায়খানার বেগ আসলে চেপে রাখা এই কাজগুলো কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য দায়ী।
এটি মারাত্মক কোনো রোগ নয়। এটা সাময়িক একটি জটিলতা যা পেটের অন্ত্র ও পাকস্থলীতে পর্যাপ্ত তরলের অভাবে সৃষ্টি হয়। অন্ত্রে ও পাকস্থলীতে যখন তরলের পরিমাণ স্বাভাবিক হতে শুরু করবে তখনই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে যায়।
সময়মতো খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা, খাবারের তালিকায় প্রতিদিন শাকসবজি ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার রাখা, ফাস্টফুড কম খাওয়া, দিনে কমপক্ষে ২০ মিনিট শারীরিক পরিশ্রম ও হাঁটাচলা করা, অ্যালকোহল গ্রহণ না করা, মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়ার মাধ্যমেই কোষ্ঠকাঠিন্য দূরে রাখা যায়।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সহজ উপায়
কিন্তু যদি এই কাজগুলো করা না হয়, তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মাত্রা আরও বাড়তে থাকবে। পরে তা ক্রনিক তথা আরও জটিল আকার ধারণ করবে। তখন ভুক্তভোগীর পেটের অশান্তি আরও বাড়বে। এমতাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য দ্রুত দূর করতে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ মেনে ওষুধ ও জীবনযাপন করতে হবে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দ্রুত দূর করে এমন কয়েকটি ওষুধের কথা এখানে বলা হবে যেগুলো খুবই কার্যকর।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপ
বেশি না, মাত্র ২ টি সিরাপের কথা আপনাদেরকে বলবো যেগুলো খেলে অল্প সময়েই কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
১. অ্যাভোলাক ( Avolac)
অ্যাভোলাক সিরাপে থাকে ল্যাক্টুলোজ যা আসলে একধরণের জোলাপ। এই ওষুধ তৈরিতে চিনির ব্যবহার করা হয় যা ল্যাক্টুলোজ উৎপন্ন করক। জোলাপ হচ্ছে যা তরল করতে ও নরম করতে জল বা পানির ব্যবহার। এই সিরাপে থাকা জোলাপ অন্ত্রে প্রবেশ করে অন্ত্রে পানি উৎপন্ন করে জমা হওয়া মলকে নরম করে দেয়। পরে স্বাভাবিক পায়খানার সৃষ্টি হয়। সিরাপটি নেয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই পায়খানা স্বাভাবিক ও নরম হয়ে ভুক্তভোগীর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে দিবে।
২. মিল্ক অব ম্যাগনেসিয়া (Milk of Magnesia)
নামেই বোঝা যায় এটা দুধের উপাদান। এটা তৈরিতে দুধ ব্যবহার করা হয়। "মিল্ক অব ম্যাগনেসিয়া" মূলত ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রক্সাইড, যা অ্যান্টাসিড হিসেবে কাজ করে। এটাও একটি জোলাপ। অন্ত্রে জল তৈরি করে অন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্রম সৃষ্টিতে কাজ করে এই সিরাপ। এটা খাওয়ার ৩০ মিনিট থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যেই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে স্বাভাবিকভাবেই মলত্যাগ হবে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার যত ওষুধ আছে "মিল্ক অব ম্যাগনেসিয়া" সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি কার্যকর বলে বিবেচিত।
এটা ট্যাবলেট আকারেও পাওয়া যায় যা চুষে খেতে হয়।
এই সিরাপ গুলোর ব্যবহারবিধিঃ
এই সিরাপ গুলো কিনতে কোনো প্রেসক্রিপশন লাগে না। কিন্তু অবশ্যই ডাক্তারকে বলে নিতে হবে কেন আপনি এই ওষুধ নিচ্ছেন।
আপনার অন্য কোনো শারীরিক অসুস্থতা যেমন- উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি ও হার্টের সমস্যা, গর্ভবতী থাকলে সেটা অভিজ্ঞ ডাক্তারের কাছে বলুন। ডাক্তার আপনার অবস্থা বোঝে তারপর সঠিক ওষুধ ও কার জন্য কত ডোজ নিতে হবে সেসব ব্যবহারবিধি বলে দিবে।
শেষকথা
কোষ্ঠকাঠিন্য কোনো মারাত্মক সমস্যা না। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপ নিতে হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। অবস্থার অবনতি হলে ডাক্তারকে জানাবেন।
sir kusthokathinno ki pailser karon hote pare.
উত্তরমুছুনHa hote pare
মুছুন