ফিলমেট সিরাপ খাওয়ার নিয়ম এবং এর উপকারিতা

ফিলমেট সিরাপ খাওয়ার নিয়ম এবং এর উপকারিতা

পেট ও অন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যার প্রতিকারে বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সেসব ওষুধের মধ্যে কিছু থাকে যেগুলো থেকে ফলাফল খুব একটা পাওয়া যায় না। আবার কোনো কোনো ওষুধ আছে খুবই কার্যকর। ফিলমেট সিরাপ তেমনই একটা কার্যকরী ওষুধ, যা পেট ও অন্ত্রজনিত সমস্যা বিশেষ করে পাতলা পায়খানা, আমাশয় দূর করে থাকে। 

ফিলমেট সিরাপ এর উপকারিতা ও ফিলমেট সিরাপ খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানতে লেখাটি ভালোভাবে পড়ে নিন।

ফিলমেট সিরাপ এর উপকারিতা 

এটি একটি অ্যান্টিবায়োটিক। যা সরাসরি রোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সক্ষম। অ্যান্টিবায়োটিক গুণসম্পন্ন এই ওষুধটা পেটের ও অন্ত্রের বিভিন্ন রোগ যেমন- পাতলা পায়খানা, আমাশয়, ডায়রিয়া সহ পেপটিক আলসারের,  যকৃত, ফুসফুস, ব্রেইন, হাড়, ত্বক, মুখ ও গলা, দাঁত,  রক্ত, মেয়েদের যোনিপথ এর মতো বিভিন্ন ব্যাকটেরীয় সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

তবে মূলত পেট ও অন্ত্রজনিত সংক্রমণেই এটা বেশি ব্যবহার করা হয়। কারণ পেটের অসুখের বিরুদ্ধে এটা খুব ভালো কার্যকর।  

পরজীবি ও ব্যাকটেরিয়ার কারণে যত রোগ হয় মানবদেহে, সেসব রোগের প্রায় সবগুলোর চিকিৎসায় ফিলমেট সিরাপ ব্যবহার উপযোগী। 

কিন্তু অবশ্যই সিরাপটি সেবন করতে চাইলে আপনি কোন সমস্যার জন্য এটা সেবন করবেন সেটা ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিবেন। ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক ওষুধ নিবেন।

ফিলমেট সিরাপ এর ক্ষতিকর দিক ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া 

যেকোনো জিনিসেরই নিজস্ব ক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া বিদ্যমান। ঠিক এই ওষুধটারও নিজস্ব কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। সীমিত ও নির্ধারিত মাত্রায় সেবনে কোনো ক্ষতির সম্ভাবণা নেই। তবে অতিরিক্ত ডোজ সেবনের ফলে মারাত্মক কিছু ক্ষতির সম্ভাবণা থাকে কিন্তু তা খুব বিরল ঘটনা।

 সাফি সিরাপ এর উপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম

এই সিরাপের সাধারণ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছেঃ

- ঘুম পেতে পারে প্রচুর। ওষুধ গ্রহণের পর চোখে ঘুম ভর করে ফলে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে বেশিরভাগ গ্রহণকারী।

- মাথা ব্যথা থাকতে পারে, না-ও পারে।

- কারও কারও বমি হতে পারে। 

- হালকা জ্বর হয়। কারও কারও জ্বর সামান্য বেশি থাকে।

- শরীর দূর্বল হয়ে পড়ে। তবে ঘুমিয়ে নিলে অথবা কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলে এই সমস্যা হয় না।

- হাত ও পায়ের পেশিতে খিচুনি এবং হালকা ব্যথা করে। 

এগুলো সাধারণ কিছু প্রতিক্রিয়া। কিন্তু অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করলে মারাত্মক কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। 

সেগুলো হলো :

- মাইগ্রেন ও মাথা ব্যথার স্থায়ীত্ব বেশি হওয়া।

- চোখে ঝাপসা দেখা। 

- পেটের অবস্থার আরও অবনতি । 

- ত্বকে ফুসকুড়ি ও চাকা। 

- ব্রেইনের কাজে অস্বাভাবিকতা।

- খিদে না থাকা। 

- মুখে স্বাদ লোপ। 

- জিভ নাড়াতে কষ্ট। 

- হ্যালুসিনেশন দেখা। 

- ঘুম না হওয়া।

- উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি। 

যাদের অ্যালার্জি, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট ও কিডনির কোনো সমস্যা আছে এবং গর্ভবতী - এমন কারও ক্ষেত্রে ফিলমেট সিরাপ নেওয়া উচিত নয়। এই সিরাপ গ্রহণের আগে ডাক্তারকে নিজের শারীরিক অবস্থার কথা অবহিত করতে হবে।

 জেনে নিন বাচ্চাদের ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানার সিরাপের নাম

ফিলমেট সিরাপ খাওয়ার সঠিক নিয়ম 

ফিলমেট সিরাপ শরীরের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার জন্য ব্যাবহার হয়ে থাকে। 

অষুধ কোম্পানির নির্দেশনা অনুযায়ী পেটের সমস্যার জন্য ফিলমেট সিরাপ খাওয়ার নিয়ম:

১ চামচ = ২০০ মি:গ্রাম।

৭ - ১০ বছর: ৪০০ মি:গ্রাম করে দিনে ৩ বার।

৩ - ৭ বছর: ২০০ মি:গ্রাম করে দিনে ৪ বার।

১ - ৩ বছর: ২০০ মি:গ্রাম করে দিনে ৩ বার।

চিকিৎসার সময় কাল ৫ - ১০ দিন। 

শিশু, বয়স্ক ব্যক্তি সবার ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন সেবন মাত্রা রয়েছে এই ওষুধের। সেই মাত্রা অনুযায়ী ওষুধ নিতে হবে। কোনোভাবেই অতিরিক্ত মাত্রায় খাবেন না।

এর ব্যবহারবিধি ও দিকনির্দেশনা সবকিছুই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী করতে হবে। কার জন্য কী পরিমাণ ডোজ কতদিন দিতে হবে তা ডাক্তারই ভালো বলতে পারবে রোগের অবস্থা বোঝে। তাই এই সিরাপ এর ডোজ শিশু থেকে বৃদ্ধ যেকোনো বয়সের জন্যই অবশ্যই ডাক্তারের দিকনির্দেশনা মোতাবেক বাস্তবায়ন করবেন।

কিছু পরামর্শ 

- এই সিরাপ যতদিন ব্যাবহার করবেন, ততদিন অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকবেন।

- পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ঘুমঘুম অবস্থা হলে তখন গাড়ি চালানো থেকে বিরত থাকবেন।

- প্রতিদিন একই সময়ে ওষুধের ডোজ নিবেন।

- কখনোই একবেলার ডোজ আরেক বেলার ডোজের সাথে মিলিয়ে নিবেন না।

- ওষুধ খাওয়ায় অবস্থার উন্নতি না হলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নিবেন।

ফিলমেট সিরাপ এর উপকারিতা ও এর খাওয়ার নিয়ম মেনে এটি সেবন করুন। অনাকাঙ্ক্ষিত ক্ষতি এড়াতে সবসময় ডাক্তারের নির্দেশনা মেনে চলুন।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ খাবেন না।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url