সোডিয়াম মানেই আতঙ্ক নয়, জেনে নিন আপনার জন্য প্রয়োজনীয় সোডিয়ামের মাত্রা
সোডিয়াম (লবন) হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। অল্প পরিমাণে হলেও এই সকল মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট কোষের শ্বসন, বর্ধণ, পরিপাক ক্রিয়া এবং খাদ্য উপাদানের বিপাকে বিশেষ ভাবে প্রভাবিত করে।
সোডিয়ামের কাজ কি?
সোডিয়াম (লবন) হলো একটি ইলেকট্রোলাইট অর্থাৎ মস্তিষ্কের সাথে রক্তের মাধ্যমে আমাদের দেহে যে বৈদ্যুতিক সংকেত গুলো আনা নেয়া হয় তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো সোডিয়াম। মানবদেহে প্রতি কেজি ওজনে ১.৮ গ্রাম সোডিয়াম রয়েছে। সোডিয়াম অম্ল ও ক্ষারের সমতা রক্ষা, স্নায়ু ও পেশীর স্বাভাবিক উদ্দীপনা শক্তি বজায় রাখা, পানির সমতা রক্ষা, অন্ত্রে কার্বোহাইড্রেট-ফ্যাটের বিশেষণ বৃদ্ধি , এমাইনো এসিডের শোষণ, হৃদপেশীর সংকোচন প্রসারণের কাজ স্বাভাবিক রাখা সহ গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পাদান করে।
সোডিয়ামের অভাবজনিত লক্ষণ ও উপসর্গ
শরীরে এই গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রোলাইট অনেক সময় কমে যায়, সেই অবস্থাকে 'হাইপোনাইট্রেমিয়া' বলে। দেহে সোডিয়ামের মাত্রা কমে গেলে শরীরে পানি কমে যায়, পেশীর খিঁচুনী, রক্তচাপ হ্রাস, দেহ শুষ্কতা, রক্তসংবহন ব্যহত হওয়া, হার্টবিট অনিয়মিত ও অস্বস্তি বোধ,বিভ্রান্তি, বমি ভাব,অবসাদ ইত্যাদি সমস্যা দেখা যায়। আবার অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণের ফলেও দেহে পানি জমে , রক্তচাপ বেড়ে যায়, ওজন বেড়ে যায় ,হৃদরোগসহ নানা জটিলতা সৃষ্টি হয়। এ কারণে পরিমিত ও পর্যাপ্ত পরিমাণে সোডিয়াম গ্রহণ করা উচিত। এছাড়া কিছু বিশেষ রোগে বা বিশেষ শারীরিক অবস্থায় সোডিয়ামের মাত্রা বাড়িয়ে-কমিয়ে নিতে হয়, যেমন কিডনি সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপে সোডিয়ামের স্বাভাবিক মাত্রা থেকে কমিয়ে এবং ডায়রিয়া, অতিরিক্ত ঘাম ঝরলে ,অতিরিক্ত বমি হলে সোডিয়ামের মাত্রা বাড়িয়ে গ্রহণ করতে হয়।
দৈনিক সোডিয়ামের চাহিদা কত?
দ্যা আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে একজন সুস্থ্য মানুষের দৈনিক ২৩০০ মি,গ্রাম/২.৩ গ্রামের বেশি সোডিয়াম খাওয়া উচিত না।
রোজ খেজুর খেলে মিলবে যেসব রোগ থেকে মুক্তি
উচ্চ সোডিয়ামযুক্ত খাবার (প্রতি ১০০গ্রামে সোডিয়ামের পরিমাণ)
১.বনরুটি (৫০১মি.গ্রা),
২. পাউরুটি (৫৯২মি.গ্রা),
৩. খিচুরি (৪১০মি.গ্রা),
৪. পপকর্ণ (লবন সহ) (৭৮৫মি.গ্রা),
৫. মুড়ি (৬৫০মি.গ্রা),
৬.রুটি (২৩১মি.গ্রা)
৭. করলা ভাজি (৪৬৯মি.গ্রা),
৮. ঢেঁড়স- টমেটো ভুনা (৫৬৫মি.গ্রা)
৯. বীট শাক (২২৬মি.গ্রা),
১০.পালং শাক (২৩৫মি.গ্রা),
১১. কলমি শাক (১০৭মি.গ্রা),
১২. আলু ভর্তা (৩১০মি.গ্রা),
১৩. নোনা ইলিশ (১০২৩মি.গ্রা),
১৪. লইট্টা (১০১৪মি.গ্রা),
১৫. চাপিলা (১৪০৮মি.গ্রা),
১৬. হাঁস রান্না (২২১মি.গ্রা)
১৭. মুরগি (৪০৪মি.গ্রা)
১৮. সসেজ বিফ (১১২৬মি.গ্রা),
১৯. আচার (মিক্সড) (৮৫৫মি.গ্রা),
২০. আলুর চিপ্স ( (৫২৫মি.গ্রা),
২১. সয়াসস (৫৬৩৭মি.গ্রা)
২২. বিস্কুট (বেকিং পাউডার দিয়ে তৈরি) (৯৩৬মি.গ্রা),
২৩. পাবদা মাছ (৩৪৫মি.গ্রা),
২৪. সল্টেড বাটার (৭১৪মি.গ্রা),
২৫. মার্জারিন (৫০৪মি.গ্রা),
২৬. মেয়োনেজ (৪৮৮মি.গ্রা),
২৭. চিজ কটেজ (৫০৯মি.গ্রা),
২৮. হাড়ি কাবাব গরু (৩৪৫মি.গ্রা),
২৯. মাছের কোপ্তা (৩৪৫মি.গ্রা)
৩০. গুড়া দুধ (৪৩৫মি.গ্রা)
৩১. বেকিং পাউডার (১১৮০০মি.গ্রা)
৩২. লবণ (৩৯৩৪০মি.গ্রা)
শেষ কথা,
সোডিয়াম মানেই আতংক নয়, সোডিয়াম মানেই হৃদরোগের ঝুঁকি নয় যদি তার ব্যবহার হয় চাহিদা অনুযায়ী। তাই অবশ্যই নিজের শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে মাত্রানুযায়ী গ্রহণ করতে হবে সোডিয়াম। বিশেষ শারিরীক অবস্থায় অবশ্যই চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী সোডিয়ামের মাত্রা নির্ধারণ করে গ্রহণ করুন
SOURCE: FCT (Food Composition Table for Bangladesh)
পোস্ট টি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।